ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানায় জমিসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে সালিশ ডাকেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম। কিন্তু সালিশ চলাকালে সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে আল-আমিন (২৮) নামে এক যুবককে আটক করে সাজানো রাজনৈতিক মামলায় জেলে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অঝোরে কাঁদেন আল-আমিনের মা আনারা বেগম।
আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে স্বামীর পেনশনের টাকা দিয়ে জমি কিনি। প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান দাবি করেন, তিনি ওই জমি ২০০৮ সালে কিনেছেন। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে আমি বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা দেন মনিরুজ্জামান। এরপর মনিরুজ্জামান আমার ছেলে আল-আমিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার রাতে সালিশে আমাদের জমির কাগজপত্র সঠিক প্রমাণিত হয়। তখন ওসি আল-আমিনকে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেন এবং সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর দিতে চাপ দেন। আমার ছেলে রাজি না হওয়ায় রাজনৈতিক মামলায় জেলে পাঠানো হয়। আমার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। অন্যায়ের কাছে আমি হেরে গেছি।
সংবাদ সম্মেলনে আনারা বেগম ব্যানারে ছেলের ছবি আঁকড়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, এই দেশে বিচার নেই, সব বিচার টাকার কাছে বন্দি। আমার ছেলে যদি মুক্তি না পায়, ভবিষ্যতে বিপথে গেলে তার দায় পুলিশ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে সরকারি পুকুর পাড়ে একদল সন্ত্রাসী রাস্তা অবরোধ করে দাঙ্গা করে। ঘটনাস্থল থেকে মশাল, লাঠি, ইটের টুকরো উদ্ধার করে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় আল-আমিনকে ২৬ জুলাই কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, আল-আমিন যুবলীগের সঙ্গে জড়িত, ছবিও আছে। সালিশ থেকে তাকে আটক করা হলেও মামলায় কেওয়াটখালী থেকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে— এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাই ভালো বলতে পারবেন।
জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে শুনেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ নিয়ে পুলিশের ভেতরে ও বাইরে তীব্র সমালোচনা চলছে। স্থানীয়রা স্বচ্ছ তদন্ত ও আল-আমিনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
আরটিভি/এমকে/এস