দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনের জনপ্রিয় তেলেগু অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী ফিশ ভেঙ্কট রাজ আর নেই। কিডনি ও লিভারজনিত জটিলতায় ভুগে তিনি শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
তেলেগু চলচ্চিত্রে দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন ভেঙ্কট। হাস্যরসাত্মক চরিত্রে তার উপস্থিতি ও সংলাপ বলার নিজস্ব ধরন তাকে দর্শকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল। তবে জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে তাকে লড়াই করতে হয়েছে চিকিৎসার খরচ যোগানোর জন্যও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেতা। কয়েক সপ্তাহ আগে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে চিকিৎসকেরা জরুরি কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। এতে খরচ ধরা হয় প্রায় ৫০ লাখ রুপি। এ সময় ভেঙ্কটের মেয়ে শ্রাবন্তী এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। ভিডিওতে তিনি জানান, তার বাবা আইসিইউতে গুরুতর অবস্থায় আছেন এবং দ্রুত ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রয়োজন।
সহায়তার আশায় অনেকেই ভেঙ্কট পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তবে দুঃখজনকভাবে তারা প্রতারণার শিকার হন। পরিবারের দাবি, অভিনেতা প্রভাস-এর নাম ব্যবহার করে এক ব্যক্তি নিজেকে তার সহকারী পরিচয় দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খরচ বহনের। কিন্তু পরে জানা যায়, সেটি ছিল ভুয়া।
পরিবার জানায়, তারা কারও কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সাহায্য পাননি, বরং প্রতারিত হয়েছেন। তবে কিছু সহশিল্পী ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য সহযোগিতা এসেছে। তেলেগু তারকা পাওয়ান কল্যাণ দুই লাখ রুপি অনুদান দেন, আর অভিনেতা বিশ্বক সেন ও এক তেলেঙ্গানা মন্ত্রী কিছু আর্থিক সাহায্য করেন। কিন্তু সময়ের অভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।
তার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। সহকর্মী, পরিচালক ও ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, ভেঙ্কট শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন তেলেগু কমেডি ঘরানার একটি অনন্য নাম। সহশিল্পীরা মনে করছেন, এমন প্রতিভাবান একজন মানুষ চিকিৎসার অভাবে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে ‘খুশি’ সিনেমার মাধ্যমে ফিশ ভেঙ্কটের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়। এরপর ‘আদি’, ‘বান্নি’, ‘ধী’, ‘গব্বর সিং’, ‘অধুর্স’, ‘ডিজে টিল্লু’, ‘মা উইন্থা গাধা বিনুমা’, ‘স্লাম ডগ হাজব্যান্ড’সহ ১৫০টির বেশি তেলেগু সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। সর্বশেষ তাকে দেখা গেছে ‘কফি উইথ আ কিলার’ সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে।
আরটিভি/এএ