প্লাস্টিকের কয়েকটি পটে হরেক রকম চকলেট, পিছনে ঘরের দেয়ালে জুলানো নানা রংয়ের চিপসের প্যাকেট, আছে কয়েকটি বিস্কিটের প্যাকেটও, কাঠের ওপর ছোট এই দোকানটি গোছানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা যুবক নাজিম উদ্দিন (২০)।
নাজিমের দোকানটি ভাসানচরের ৭ নম্বর ক্লাস্টারের ১০ নম্বর হাউজের পাশে রাস্তার কিনারায়। তার দোকানকে ঘিরে সকাল হলে জমে উঠে রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশুদের আড্ডা। ভাসানচরে নাজিমের দোকান ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানায় আরও কয়েকটি দোকান আছে ক্লাস্টারে বাহিরে কেওড়া বাগানের মধ্যে। যা রোহিঙ্গাদের আবস্থল থেকে কিছুটা দূরে।
নাজিমের দোকানের পাশে মোবাইলে কথা বলতে দেখা যায় বিলকিছ (৩৪) নামে এক রোহিঙ্গা নারীকে। দামী মোবাইলে বিলকিছ ভিডিও কলে কক্সবাজারে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরের চিত্র দেখানোর চেষ্টা করছে বার বার। মুখে হাসি রেখে বিলকিছ মোবাইলফোনে অন্য প্রান্তে থাকা আপনজনকে বার বার বুঝানোর চেষ্টা করছে যে ভাসানচরে তারা খুব ভালো আছেন।
ভাসানচরের ৭ নম্বর ক্লাস্টারের ৯ নম্বর হাউজে বসবাস করা বিলকিছের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, ভাসানচরে আসার আগে সরকার যে আশ্বাস দিয়েছিলেন তার পুরোপুরি সঠিক বাস্তবায়ন দেখে খুবই আনন্দিত তারা। এখন তারা উখিয়াতে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আসতে উদ্বুদ্ধ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রোহিঙ্গা শিশুরা রাস্তার উপর ও ক্লাস্টারে মাঝে থাকা খালি জায়গায় খেলা করছে। অনেকে সাইকেল ও রিকশার পুরান চাকার রিং নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন।
আলাপকালে রোহিঙ্গা শিশু বেলাল (১২) জানায়, মা-বাবাসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে সে বসবাস করে ১৩ নং ক্লাস্টারের ৪ নম্বর হাউজে। কুতপালং থেকে আসার সময় সে খেলার বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে এসেছে। এখানে এসে বিশাল রাস্তা ও খেলার মাঠ ও খোলামেলা জায়গা পেয়ে খুশি সে।
৪ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে নৌ বাহিনীর তিনটি জাহাজে চট্টগ্রাম থেকে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গার একটি দল ভাসানচরে পোছায়। প্রথম ধাপে নারী-পুরুষ, শিশুসহ ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে শিশু রয়েছে ৮১০ জন, পুরুষ ৩৬৮ জন ও নারী ৪৬৪ জন রয়েছে।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, ভাসানচরে আসা সকল রোহিঙ্গাদের প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তার পর ওয়ার হাউজে নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের ব্রিফিং করেন। ব্রিফিং শেষে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত রাখা ৭,৮,৯,১০,১৪ ও ২০ নম্বর ক্লাস্টারে তাদেরকে রাখা হয়।
এসএস