ফুটবলের পর এবার ফুটসালকে টেনে তুলতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এজন্য আসন্ন সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় এএফসি এশিয়ান কাপ ফুটসালের বাছাইপর্বের আগেই কোচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো পুরুষ ফুটসাল জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ইরানের অভিজ্ঞ কোচ সাঈদ খোদারাহমি। এই নিয়োগ বাংলাদেশের ফুটসাল ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, এশিয়ান ফুটসালে একটি পরিচিত নাম ৫৯ বছর বয়সী সাঈদ খোদারাহমি।
এএফসি এশিয়ান কাপ ফুটসালের বাছাইপর্বের ট্রায়ালের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫৩ জন খেলোয়াড় বাছাই করা হয়েছে। ঢাকায় পৌঁছে চূড়ান্ত ট্রায়ালের মাধ্যমে ১৪ সদস্যের দল নির্বাচন করবেন সাঈদ খোদারাহমি।
ফুটসালে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগের জন্য এএফসি লেভেল-৩ সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো কোচের এই সনদ না থাকায় বিদেশি কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় বাফুফে। তাই অভিজ্ঞ খোদারাহমিকে নিয়োগ দিয়েছে বাফুফে।
ফুটসাল কমিটির চেয়ারম্যান ইমরানুর রহমান তাকে ‘ফুটসালের স্কলার’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তার অভিজ্ঞতা এবং প্যাশন আমাদের ফুটসালের যাত্রায় বড় অবদান রাখবে।
বাংলাদেশে ফুটসাল এখনও শৈশব পর্যায়ে রয়েছে। দেশে ফুটসালের জন্য নির্ধারিত কোনো ইনডোর ভেন্যু নেই। তবে হ্যান্ডবল ফেডারেশনের স্টেডিয়াম এবং মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম ব্যবহার করে অনুশীলন পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ফুটসালের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী সাঈদ খোদারাহমি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি ২৬ জুলাই রাতে প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছি। আমার দায়িত্ব কঠিন, তবে আমি আশাবাদী। বাংলাদেশে ফুটসাল আজ জন্ম নিয়েছে এবং আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ফুটসালের ভবিষ্যৎ খুব শক্তিশালী। ফুটসাল এখন শিশু এবং শিশুদের সহায়তা প্রয়োজন। সবাই হাতে হাত ধরে কাজ করলে আমরা সফল হব। ইরানে ৩৫ বছর আগে ফুটসাল শুরু হয়। এখন প্রতিটি গ্রামে ফুটসাল স্টেডিয়াম রয়েছে। বাংলাদেশেও এমন ভবিষ্যৎ সম্ভব।
বাংলাদেশের খাবার ও সংস্কৃতির প্রশংসা করে এই কোচ বলেন, আমার পরিবার সতর্ক করেছিল যে আমি বাংলাদেশি খাবার খেতে পারব না। কিন্তু এখানে এসে মনে হচ্ছে, আমি ইরানেই আছি। আমি এখানে ভালো আছি।
২০১০ সাল থেকে এএফসি’র ফুটসাল ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছেন খোদারাহমি। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারের পুরুষ ও নারী জাতীয় ফুটসাল দলের কোচ ছিলেন তিনি। তার নেতৃত্বে মিয়ানমারের ফুটসাল দল বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১০৩ থেকে ৮০-এ উন্নীত হয়, যা ফুটসালে ২৩ ধাপ এগোনোর একটি উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব।
ফলে তার এই অভিজ্ঞতা ও দূরদৃষ্টি দেশের খেলোয়াড়দের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। এই ইরানি কোচের হাত ধরে বাংলাদেশ ফুটসাল আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজের স্থান তৈরি করতে পারবে কিনা, সেটাই এখন সবার প্রত্যাশা।
আরটিভি/এসআর/আইএম