বিভিন্ন জটিলতা ও অনিশ্চয়তা পেরিয়ে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত এই সভায় এশিয়া কাপ আয়োজন, এসিসির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, এশিয়ান ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নয়নসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই সভাকে ঘিরে শুরু থেকেই ছিল কূটনৈতিক উত্তাপ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) প্রথমে বাংলাদেশে সভায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভেন্যু পরিবর্তনের দাবি জানায়। পরে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ওমান-ও অনুরূপ আপত্তি তোলে। এসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া সভার কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
তবে এসিসি চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দৃঢ় অবস্থানে নির্ধারিত সময় ও ভেন্যুতেই সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয় সভা। ভারত ও শ্রীলঙ্কা সহ কয়েকটি দেশ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হলেও, অর্ধেকের বেশি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসিসি সভাপতি মোহসিন নাকভি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, মিটিংটি অত্যন্ত সফলভাবে হয়েছে। সব সদস্য দেশই অংশ নিয়েছে—কেউ সরাসরি, কেউ অনলাইনে। আমিনুল ভাই এবং বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের অসাধারণ আতিথেয়তার জন্য। সত্যিই স্মরণীয় দুটি দিন কাটলো।’
সভায় অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল আসন্ন এশিয়া কাপ ২০২৫। যদিও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে সূচি ও ভেন্যু নিয়ে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন এসিসি সভাপতি। ‘সূচি ও আয়োজন সংক্রান্ত আলোচনায় আমরা অগ্রসর হচ্ছি। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে পরামর্শ চলছে। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে এবং আমরা তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারব।’
সভায় আলোচনায় উঠে আসে ২০২৭ সালে বাংলাদেশে এশিয়া কাপ আয়োজনের সম্ভাবনা। এ বিষয়ে এসিসি সভাপতি বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি। আমি ও আমিনুল ভাই মিলে কিছু অমীমাংসিত বিষয় দ্রুত সমাধান করব। সবকিছু ঠিক থাকলে আয়োজন বাংলাদেশেই হবে।’
নাকভি যেখানে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন, সেখানে আমিনুল কৃতিত্ব ভাগ করে দেন সকল সদস্য দেশকে। তিনি বলেন, “সবকিছুই নেতৃত্বের বিষয় নয়, বরং সদস্য দেশগুলোর সমন্বয় ও সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমরা সবাই ক্রিকেটের জন্য কাজ করছি, সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।”
বিভিন্ন দেশের আপত্তি ও রাজনৈতিক টানাপোড়ন সত্ত্বেও ঢাকায় এসিসির সভা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়া নিঃসন্দেহে বিসিবি ও এসিসির কূটনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ। সভার মধ্য দিয়ে এশিয়া কাপ ও এশিয়ান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আরও এগিয়ে গেল এক ধাপ।
আরটিভি/এসকে