ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে ডিউক বলের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ করেছে ভারতীয় দল। শুভমন গিল, মহম্মদ সিরাজদের মতো ক্রিকেটাররা জানিয়েছেন, বল দ্রুত নরম হয়ে যাচ্ছে, আকৃতি হারাচ্ছে এবং বোলারদের জন্য তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এবার এই বিতর্কে মুখ খুললেন ডিউক বল প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্ণধার দিলীপ জাজোদিয়া। জানালেন, নির্দিষ্ট প্রজাতির গরুর অভাবই বলের গুণগত মানের অবনতির অন্যতম কারণ।
জাজোদিয়া জানান, ডিউক বলের জন্য ব্যবহৃত চামড়া সাধারণত স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের ‘অ্যাঙ্গাস হাইটস’ বা ‘অ্যাবারডিন হাইটস’ প্রজাতির গরুর কাছ থেকে আসে। এই গরুর চামড়া শক্ত, চকচকে ও দীর্ঘস্থায়ী। বিশেষ করে গরুর পিঠের কাছের চামড়া থেকে তৈরি বল সবচেয়ে উন্নতমানের হয়। কিন্তু এখন আর এই প্রজাতির গরু সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক গরুর খামার বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে মানসম্পন্ন কাঁচামাল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, এখনকার দিনে আপনি যদি ভাগ্যবান হন, তবেই কাঙ্ক্ষিত মানের চামড়া পাবেন। নতুন গরুর চামড়া অতটা মোটা নয়, তাই বল আগের মতো টেকসই হচ্ছে না।
লর্ডসে চলতি টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় দিনই দেখা গেছে এই সমস্যার প্রতিফলন। দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার পর মাত্র ১০.৩ ওভারেই বলের আকার বদলে যাওয়ার অভিযোগ তোলে ভারতীয় দল। আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকতের কাছে সরাসরি অভিযোগ করেন বুমরাহ-শুভমনরা। বল রিংয়ে না ঢোকায় আম্পায়াররা বল পরিবর্তন করতে বাধ্য হন।
কিন্তু নতুন বল নিয়েও সন্তুষ্ট ছিলেন না ভারতের ক্রিকেটাররা। শুভমন গিল ও মহম্মদ সিরাজ প্রকাশ্যে বলের পুরনো হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সিরাজ তো স্টাম্প মাইকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, এটা ১০ ওভার পুরনো বল মনে হচ্ছে? সত্যি সত্যি?
এমনকি ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাসকারও বলের অবস্থা দেখে বিস্মিত হন। তিনি বলেন, এটা অন্তত ২০ ওভারের পুরনো বল মনে হচ্ছে।” একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, আদৌ ইংল্যান্ডকে ডিউক বলে খেলা চালিয়ে যাওয়া উচিত কি না।
পরবর্তীতে আরেকবার বল বদলানো হয়, কারণ মাত্র আট ওভারেই বল আকারে বড় হয়ে যায়। তখনও আম্পায়াররা নিশ্চিত হন যে বল পরীক্ষার রিংয়ে ঢুকছে না। দ্বিতীয়বার বল বদলের পরে অবশ্য ভারতীয় দল আর কোনও অভিযোগ করেনি।
সবমিলিয়ে, একদিকে বলের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন, অন্যদিকে প্রস্তুতকারকদের কাঁচামালের সংকট—ডিউক বল নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। ক্রিকেটবোর্ডগুলোর কাছে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনার সময় এসেছে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
আরটিভি/এসকে