পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫ , ০৯:৪৪ পিএম


মিরপুরে বাঘের গর্জনে দিশেহারা পাকিস্তান, ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

গত মে মাসে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যেখানে ঘরের মাঠে টাইগারদের বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতেছিল ম্যান ইন গ্রিনরা। সেই হার সহজভাবে নিতে পারেনি শান্ত-লিটনরা। তাই পাকিস্তানকে নিজেদের ডেরায় পেয়ে গজরে উঠেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দাপট দেখিয়ে টানা দুই জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।

বিজ্ঞাপন

এতে ১ ম্যাচ আগে সিরিজ নিশ্চিত করল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল টাইগাররা। এর আগে ৬টি টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। যেখানে ৫টিতেই জিতেছিলর পাকিস্তান। আর একটি জয় টাইগারদের, সেটি ছিল ১ ম্যাচের সিরিজ।

তাই এক ম্যাচের বেশি এমন টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ দল। তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলতে পারলে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার ইতিহাস গড়বে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবাল (২২ জুলাই) আগে ব্যাট করে পাকিস্তানকে ১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন

সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই রান হন সাইম। ৪ বলে ১ রান করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় ওভারে ডাক আউট হন মোহাম্মদ হারিস। 

বিজ্ঞাপন

সতীর্থদের আশা যাওয়ার মিছিলে নিজেকে ধরার লড়াই করছিলেন ফখর জামান। কিন্তু চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে এই ব্যাটারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন শরিফুল। ৮ বলে ৮ রান করেন ফখর।

পঞ্চম ওভারে তানজিম সাকিবের হাতে বল তুলে দেন লিটন। ওভারের তৃতীয় বলে হাসান নাওয়াজকে ফেরান তিনি। পরে একই বলে লিটন হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। এতে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান।

এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক। কিন্তু ২৩ বলে ৯ রান করে মাহেদীর প্রথম শিকার বনে যান তিনি। ১৮ বলে ১৩ রান করে তাকে সঙ্গ দেন খুশদিল শাহও। 

তবে আব্বাস আফ্রিদিকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন ফাহিম আশরাফ। দুজনের ব্যাটে ভর করে এগোতে থাকে পাকিস্তান। কিন্তু ১৭তম ওভারের প্রথম বলে আব্বাসকে বোল্ড করে টাইগারদের ব্রেক থ্রু এনে দেন শরিফুল ইসলাম। ১৩ বলে ১৯ রানের এই পাক পেসার। অপর প্রান্ত থেকে লড়াই করতে থাকেন ফাহিম।

তাকে যোগ্য দিয়ে আশা জাগান আহমেদ দানিয়েল। ১৯তম ওভারে রিশাদের বলে বলে বাউন্ডারি মেরে টাইগারদের চমকে দিয়েছিলেন ফাহিম। কিন্তু ওভারের শেষ বলে বোল্ড আউট হন তিনি। ৩২ বলে ৫১ রানে আউট হন এই পাক অলরাউন্ডার।

শেষ ওভারে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ১৩ রান। প্রথম বলে চার মেরে আশা জাগিয়েছিলে  দানিয়েল। পরের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ আউট হেলে ১২৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে ৮ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এ ছাড়াও শেখ মাহেদী ও তানজিম সাকিব দুটি করে এবং রিশাদ ও মোস্তাফিজুর রহমান নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩ রান করে দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ।

নাঈমের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক। ৯ বলে  রান করে ফেরেন তিনি। এরপর পিচে এসেই রান আউটে কাটা পড়েন তাওহীদ হৃদয়। এতে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

তবে লড়াই করার চেষ্টা করছিলেন আগের ম্যাচের নায়ক পারভেজ ইমন। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে পঞ্চম বলে পাকিস্তানকে ক্যাচ উপহার দিয়ে বসেন এই ব্যাটার। এতে ১৪ বলে ১৩ রানে ফেরেন তিনি। এতে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৯ রান তোলে টাইগাররা।

এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করছেন শেখ মাহেদী ও নাঈম শেখ। দুজনের ব্যাটে ভর করে ১০ ওভারে ফিফটি তুলে নেয় টাইগাররা। ৪৯ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। কিন্তু এরপর ক্যাচ আউট হন মাহেদী। ২৫ বলে ৩৩ রান করেন তিনি।

৪ বলে ১ রান করে তাকে সঙ্গ দেন শামীম পাটোয়ারী। এরপর ৪ বলে ৭ রান করে তানজিম সাকিব ও ৪ বলে ৮ রান করে আউট হন রিশাদ হোসেন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করছিলেন জাকের।

নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে ৪৬ বলে ফিফটি তুলে নেন জাকের। তবে ইনিংসে শেষ বলে ছক্কা হাকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন তিনি। তার ৪৮ বলে ৫ রানে ভর করে ১৩৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায় টাইগাররা।

পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়াল ও আব্বাস আফ্রিদি। এ ছাড়াও ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ নেন একটি করে উইকেট।

আরটিভি/এসআর

 

 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission