হারাম টাকা দানে যে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫ , ০৬:৫৫ পিএম


হারাম টাকা দানে যে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে
ছবি: সংগৃহীত

জীবনধারণ ও বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে উপার্জন করতে হয়। তবে উপার্জনের ক্ষেত্রে অনেকেই হালাল-হারামের বিষয়টি মাথায় রাখেন না। অথচ ইসলামে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। 

বিজ্ঞাপন

ইসলামি শরিয়তের দিকনির্দেশনা হলো হালাল পথে জীবিকা উপার্জন করা। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‌যে ব্যক্তি হালাল খাবার খেয়েছে, সুন্নাহ মোতাবেক আমল করেছে ও মানুষকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে, সে জান্নাতে যাবে। (তিরমিজি: ২৫২০)।

অন্যদিকে অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় সব উপার্জন ইসলামে হারাম। এর মধ্যে সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, রাহাজানি, ছিনতাই, জুয়া, মিথ্যাচার, চাঁদাবাজি, জবরদখল, যৌতুক, প্রতারণা ও প্রশ্নফাঁস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া যাবতীয় অসামাজিক অনাচারে লিপ্ত হয়ে জীবিকা উপার্জন করাও হারাম। 

বিজ্ঞাপন

এসব পন্থায় উপার্জন করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ নিষেধ করে বলেন,  وَ لَا تَاۡكُلُوۡۤا اَمۡوَالَكُمۡ بَیۡنَكُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَ تُدۡلُوۡا بِهَاۤ اِلَی الۡحُكَّامِ لِتَاۡكُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ 

অর্থ: তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অবৈধ পন্থায় গ্রাস কোরো না এবং মানুষের ধনসম্পত্তির কিয়দাংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশে তা বিচারকদের কাছে নিয়ে যেয়ো না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৮)।

জীবনের চলার পথে সুখ-দু:খ আসবে। তবে সব সময় হালাল পথেই চলতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা পবিত্র বস্তু আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো, যদি তোমরা একমাত্র তারই ইবাদত করে থাকো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৭২)।

বিজ্ঞাপন

অনেকের ধারণা, অবৈধ উপার্জন করে সেখান থেকে কিছু দান করলে কিংবা হজ করে ফেললেই সব সম্পদ বৈধ হয়ে যায়! অথচ বিষয়টি মোটেও সত্য নয়। অবৈধ উপার্জনের জন্য অবশ্যই মানুষকে কিয়ামতের দিন জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে।  
 
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিনে কোনো মানুষ নিজের স্থান থেকে এক বিন্দুও সরতে পারবে না, যতক্ষণ না তার কাছ থেকে চারটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে নেওয়া হবে। তন্মধ্যে একটি প্রশ্ন হচ্ছে, নিজের ধন-সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে? (তিরমিজি: ২৪১৭)।

বিজ্ঞাপন

হারাম উপার্জনকারীর কোনো ইবাদতই মহান আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। এ উপার্জন ইসলামের দৃষ্টিতে অপবিত্র। আর ইবাদত, দোয়া, দান-সদকা পবিত্র জিনিস, যা কেবল পবিত্র বস্তুর মাধ্যমেই সম্পন্ন করা আবশ্যক। 

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণিত হাদিসে আছে, এমন কখনও হবে না যে, কোনো বান্দা হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন করবে, এরপর তা থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করবে এবং তাতে বরকত দান করা হবে; সে তা থেকে সদকা করবে এবং তা কবুল করা হবে। বরং ওই ব্যক্তি সেই সম্পদ মৃত্যুর পর রেখে গেলেও তা তাকে আরও বেশি করে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা গুনাহ দিয়ে অন্য গুনাহ নির্মূল করেন না। তবে নেক আমল দিয়ে গুনাহ নির্মূল করেন। নিশ্চয়ই অপবিত্র বস্তু অপর অপবিত্র বস্তুর অপবিত্রতা দূর করতে পারে না। (মুসনাদে আহমদ: ৩৬৭২; মুসনাদে বাজ্জার: ২০২৬)।

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে হালাল-হারামের পার্থক্য বোঝার পাশাপাশি সে অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুক। আমিন।

আরটিভি/আইএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission