শেখ হাসিনার ‘ফেরার পরিকল্পনা’ ঘিরে গোপন বৈঠক, গ্রেপ্তার ২২

আরটিভি নিউজ  

শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫ , ০১:৪২ এএম


শেখ হাসিনার ‘ফেরার পরিকল্পনা’ ঘিরে গোপন বৈঠক, গ্রেপ্তার ২২
কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘গোপন বৈঠক’ করেছেন এমন অভিযোগে ২২ জন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া, বৈঠকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনীর এক মেজরকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকায় সেনা সদরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানানো হয়। এ ছাড়া, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন মতে, নিষিদ্ধ সংগঠনের এই অংশ আবারও সংগঠিত হয়ে সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ ও কৌশলগত পুনর্বিন্যাসে ব্যস্ত ছিল। সেই কাজের অন্যতম সমন্বয়কারী ছিলেন সেনাবাহিনীর মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিক।

ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ‘প্রিয় স্বদেশ’, ‘এফ ৭১ গেরিলা’, ‘শেখ হাসিনা’, ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম’সহ একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। 

ভাটারা থানার পুলিশ জানায়, ৮ জুলাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসুন্ধরার কে বি কনভেনশন সেন্টারে ‘নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ’ একটি বৈঠক ডাকে, যেখানে ৩০০–৪০০ লোক অংশ নেন। অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার আহ্বানে সারা দেশ থেকে ঢাকায় লোক এনে শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে ‘অস্থিরতা সৃষ্টি’ ও শেখ হাসিনার ‘পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়া’ নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করেন। বৈঠকে সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয় এমন অভিযোগে ঘটনার পর ১৩ জুলাই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ঢাকার ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়, দিনব্যাপী বৈঠকটিতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অংশ নেন। গোপন ওই বৈঠকে সেনাবাহিনীর এক মেজর অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সেতাকর্মীদের ‘প্রশিক্ষণ দিয়েছেন’ বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা ও গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন। এই দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে কনভেনশন সেন্টারে কীভাবে সংগঠনের সদস্যদের এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল এবং শেখ হাসিনাকে ‘ঘোষণার মাধ্যমে’ ফেরত আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

ডিবি জানায়, কনভেনশন সেন্টারের ব্যবস্থাপক মুজাহিদ পরিকল্পিতভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিলেন। সেখানকার অনেকের বক্তব্য অনুযায়ী, দিনজুড়ে সেখানে ব্যানারবিহীন একধরনের ‘রাজনৈতিক রিহার্সেল’ চলছিল। এরই অংশ হিসেবে ঢাকার বাইরে থেকেও লোকজন আনা হয়।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে জবাবে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই মেজরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তারা অবগত আছেন। তার বিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বলতে পারবো।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া আরেক সেনা কর্মকর্তা মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ঘটনাটি জানার পর ওই মেজরকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission