দগ্ধদের সর্বোত্তম চিকিৎসাসেবা দিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

আরটিভি নিউজ

রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫ , ০২:৫৭ এএম


দগ্ধদের সর্বোত্তম চিকিৎসাসেবা দিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে এবং ট্রমা কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিংয়ের প্রতি জোর দেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাত সোয়া ৯টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে যান। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি বেরিয়ে আসেন।

হাসপাতালে পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের কাছ থেকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা শোনেন এবং আহত রোগীদের বর্তমান অবস্থা জানতে চান।

অধ্যাপক নাসির বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। রোগীদের আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত মূল্যায়নে বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪ জন ক্রিটিক্যাল, ৯ জন সিভিয়ার এবং ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরির রোগী আছেন। তবে এ মূল্যায়ন রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান উপদেষ্টা চিকিৎসার জন্য কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, ওষুধ বা অন্যকিছুর প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, এ মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর বাইরে যে দু-একটি সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল সেগুলো সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা হতাহতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি হাসপাতালগুলোতে দগ্ধ রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসকরা অতিদ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রায় সবাইকে বার্ন ইনস্টিটিউট ও সিএমএইচে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালককে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। চিকিৎসক, নার্সসহ সব সেবাদানকারীরা প্রস্তুত ছিলেন এবং একসঙ্গে জরুরি বিভাগে আসা প্রায় ৩০ জন দগ্ধ রোগীকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম হন।

তিনি আরও জানান, প্রায় ১০টি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তীতে অন্য হাসপাতালে রোগীদের দ্রুত স্থানান্তরিত করার কারণে প্রথমদিকে নিহত ও আহত রোগীর সংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেহাবশেষ ছিল যেগুলোর ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়েছে, যার ফলে কিছু সময় লেগেছে। রোগীদের স্থানান্তরের সময়ে আম্বুলেন্সের অভাব প্রকটভাবে বোঝা গেছে। এ দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাগুলো দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এ ছাড়াও দগ্ধ রোগীদের নিকটাত্মীয়দের হাসপাতালে অবস্থানের সময়ে তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে পরিচালককে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি বলেন, রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে যারা এই বিপদের সময়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি। হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission