ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। প্রস্তাবিত আইন কার্যকর হলে গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে মানুষের হয়রানি অনেক কমে যাবে, পুলিশের জবাবদিহিতা বাড়বে এবং বিচার কাজ দ্রুততর হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিআরপিসি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এদিন সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এই আইনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন আইন ২০২৫ আজ (২৪ জুলাই) অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই আইন কার্যকরী হলে গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে মানুষের হয়রানি অনেক কমে যাবে, পুলিশের জবাবদিহীতা বাড়বে এবং বিচার কাজ দ্রুততর হবে। এই আইনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হচ্ছে—
• পুলিশকে পরিচয় প্রকাশ করে গ্রেপ্তার করতে হবে। গ্রেপ্তার করলেই মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্ট পূরণ করতে হবে পুলিশকে। গ্রেপ্তারকৃতের সব আইনি সুরক্ষা প্রতিপালিত হয়েছে কি না, মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্টে তার চেকলিস্ট পূরণ করতে হবে, যা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করতে হবে।
• ৫৪ ধারায় পুলিশের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা অবারিত থাকছে না। কগনিজেবল অফেন্স পুলিশের সামনে ঘটতে হবে বা পুলিশকে সন্তুষ্ট হতে হবে যে আসামি এই অপরাধ করেছে। সন্তুষ্টির কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
• গ্রেপ্তারের পর গ্রেপ্তারকৃতের পরিবারকে যত দ্রুত সম্ভব (না হলে অবশ্যই ১২ ঘণ্টার মধ্যে) জানাতে হবে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে হবে।
• গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি বা রিমান্ডের পর আসামি অসুস্থ বা আহত হলে তাকে ডাক্তার কর্তৃক পরীক্ষা করতে হবে এবং আঘাতের কারণ নিশ্চিত হতে হবে, তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের দায় থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
• যে সংস্থাই গ্রেপ্তার করুক না কেন, গ্রেপ্তারের তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় জিডিভুক্ত করতে হবে। প্রত্যেক থানায় ও জেলা/ মেট্রো পুলিশ হেডকোয়ার্টারে প্রতিদিনের গ্রেপ্তারের তথ্য ও তালিকা প্রদর্শন করতে হবে।
• সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষায় আদালত প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারবে। আদালত সাক্ষীর প্রয়োজনীয় খরচ দিতে পারবে।
• এক মামলায় পুলিশ রিমান্ড কোনোভাবে ১৫ দিনের বেশি দেয়া যাবে না, আগে আনলিমিটেড দেয়ার সুযোগ ছিল।
• মিথ্যা মামলা প্রমাণিত হলে বাধ্যতামূলক সাজা দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে অর্থদণ্ড বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করা হয়েছে।
আরটিভি/একে