পানি প্রত্যাহারে পরিবেশগত বিপর্যয় জনসমক্ষে আনার আহ্বান

আরটিভি নিউজ  

শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ , ০৮:২৫ পিএম


পানি প্রত্যাহারের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত বিপর্যয় জনসমক্ষে আনুন 
ছবি: সংগৃহীত

উজানে ৫৪টি যৌথ নদী থেকে একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশে পরিবেশ ও প্রতিবেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন পানিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও গবেষকেরা। তারা বলেন, এ বিপর্যয় শুধু প্রাকৃতিক নয়, বরং মানবসৃষ্ট। তাই বাংলাদেশকে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সরব হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। ‘পানি নিয়ে সংঘাত: বাংলাদেশের পরিবেশগত বিপর্যয়ের প্রতিকার’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)। সহযোগিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের তাসিং সোলস।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন আইএফসি চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান এবং সঞ্চালনা করেন আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ উজানের দেশগুলোর একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে হঠাৎ পানি ছেড়ে দেওয়ায় মারাত্মক বন্যা দেখা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের আগস্টে ত্রিপুরার ডম্বুর জলাধার থেকে বিনা নোটিশে পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হয়, যা ৪০ বছরে দেখা যায়নি।

তারা বলেন, এই পানি সংকট কৃষি, মৎস্য, বন, বন্য প্রাণী, নৌপরিবহনসহ সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ফলে পেশা হারিয়ে মানুষ দেশান্তরী হচ্ছে।

image

বিজ্ঞাপন

সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডা, নেপাল, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষকেরা। তাদের মধ্যে ছিলেন ড. মনিরুল কাদের মির্জা (কানাডা), রামজি ভান্ডারি (নেপাল), এবো মিলি (ভারত), অধ্যাপক সাইয়াদুর রহমান (বাংলাদেশ), ড. মোহাম্মদ ইমরান আনসারী ও মেহরাজ আক্তার মোমেন (যুক্তরাষ্ট্র)।

বিজ্ঞাপন

সম্মেলনে প্রস্তাব করা হয়, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে একটি বহুপক্ষীয় কমিশন গঠন করে যৌথ নদীগুলোর স্বচ্ছ ও ন্যায্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে নেতৃত্ব নিতে হবে।

গৃহীত প্রস্তাবে আরও বলা হয়, গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার আগেই নতুন, ন্যায্য ও পর্যবেক্ষণযোগ্য চুক্তি করতে হবে, যাতে সারা বছর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা যায়। ভারতের একতরফা নদী সংযোগ প্রকল্প স্থগিতেরও দাবি জানানো হয়।

তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা, গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ, জলাধার খনন ও দেশের পানি ধারণক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বক্তারা বলেন, অববাহিকার সব দেশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান নিশ্চিত করে নদীগুলোর টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাপ্তি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমাদ। দিনব্যাপী সম্মেলন শেষে সরকারকে যৌথ নদীগুলোর বিপর্যয় মূল্যায়ন করে তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপন করার আহ্বান জানানো হয়।

আরটিভি/এসকে/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission