বর্তমান কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও অফিসে দীর্ঘ সময় কাটানোর ফলে সহকর্মীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়া এখন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক সময় এই ঘনিষ্ঠতা রূপ নেয় রোমান্টিক সম্পর্কে। তবে অফিসে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা ও বিবেচনা করা জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমেই জানা দরকার, প্রতিষ্ঠানের নীতিমালায় এ বিষয়ে কী বলা আছে। অনেক প্রতিষ্ঠানেই সহকর্মীদের মধ্যে রোমান্স নিরুৎসাহিত করা হয় বা কিছু ক্ষেত্রে এমন সম্পর্ক গোপন না রেখে তা কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে চাকরিজীবনে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সম্মতির ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তোলাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একপক্ষ আগ্রহী না হলে বা সম্পর্ক একপাক্ষিক হলে তা যৌন হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগে পরিণত হতে পারে। এতে ব্যক্তিগত ও পেশাগত উভয় জীবনেই বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়া, সম্পর্ক যেন কর্মপরিবেশকে প্রভাবিত না করে সেদিকেও সচেতন থাকতে হবে। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তা শুধু সম্পর্কযুক্ত দুজনের নয়, পুরো টিমের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অফিসে শুরু হওয়া সম্পর্ক ভেঙে গেলে কর্মক্ষেত্রে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির জন্ম দেয়। ফলে ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সম্পর্ক শুরু করার আগে ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত।
এ বিষয়ে মার্কিন ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ ভিকি সালেমি বলেন, যদি বুঝতে পারেন যে সম্পর্কের বিষয়ে অফিসের মানবসম্পদ বিভাগকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হতে পারে বা বদলির মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে, তাহলে সম্পর্কটি নিয়ে আরও গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে।
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইলে কিছু কৌশল অনুসরণ করার পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন, সম্পর্কটি একেবারে গোপন না রেখে নির্দিষ্ট সহকর্মীদের জানানো, তবে অফিসে খোলামেলা ব্যক্তিগত আলোচনা থেকে বিরত থাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ করলে সেটি গুজবের জন্ম দিতে পারে। তাই আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা ভালো।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সম্পর্কের মাঝেও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা। দায়িত্বে মনোযোগী থাকা এবং অফিসের পরিবেশকে প্রভাবিত না করাই সম্পর্ক ও ক্যারিয়ার—দুইয়ের জন্যই কল্যাণকর।
অফিসে প্রেম করতেই হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। তবে সম্পর্ক গড়ে উঠলে সেটি যেন কর্মক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকা বুদ্ধিমানের কাজ।
আরটিভি/এসকে/এআর