একসময় ডায়াবেটিসকে বয়স্কদের রোগ বলে মনে করা হতো। তবে সময় বদলেছে। এখন তরুণ-যুবাদের মধ্যেও বাড়ছে এই নীরব ঘাতকের প্রকোপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) একে ‘গ্লোবাল এপিডেমিক’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকেই জানেন না যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ফলে দেরিতে রোগ ধরা পড়ে, বাড়ে জটিলতা। অথচ শরীরের একটি অবহেলিত অঙ্গ, পা প্রথম দিকেই সংকেত দিতে শুরু করে।
কেন পায়ে প্রভাব ফেলে ডায়াবেটিস?
রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ স্নায়ু ও রক্তনালিগুলোর ক্ষতি করে। শরীরের প্রান্তিক অংশ পা-তে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। একে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’। উপেক্ষা করলে ক্ষত, পচন ও এমনকি পা কেটে ফেলতেও হতে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখে চিনবেন?
অসাড়তা ও ঝিনঝিনে অনুভূতি: পায়ের পাতায় হঠাৎ অবশ লাগা বা চিমটি কাটার মতো অনুভব হলে তা হতে পারে স্নায়ুপ্রদাহের ইঙ্গিত।
লোম উঠে যাওয়া: পা ও পায়ের পাতার লোম উঠে যাওয়া।
জ্বালাভাব ও ব্যথা: রাতে পায়ের তালুতে জ্বালাভাব, আগুন লাগার মতো অনুভূতি হলে তা হতে পারে উচ্চ রক্তচিনির প্রভাবে স্নায়ু ক্ষয়ের ফল।
ত্বকে পরিবর্তন: পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যাওয়া, লোম পড়ে যাওয়া বা রঙের পরিবর্তন সবই হতে পারে ডায়াবেটিসের লক্ষণ।
জখম সহজে না শুকানো: সামান্য কাটা-ছেঁড়াও যদি দীর্ঘদিন না শুকায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি হতে পারে ডায়াবেটিক ফুটের লক্ষণ।
পেশিতে টান: হাঁটাচলা, সিঁড়ি ওঠা কিংবা শরীরচর্চার সময়ে মাঝেমধ্যেই পায়ের পেশিতে টান লাগা।
হাঁটার সময় পা ভারী বা ব্যথা লাগা: হাঁটতে গেলে পা ভারী লাগে বা ব্যথা হয়? হতে পারে ডায়াবেটিক পারিফেরাল আর্টারি ডিজিজের পূর্বাভাস।
পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া: এক পা যদি অপরটির চেয়ে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়, বুঝতে হবে রক্ত চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন?
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
প্রতিদিন পায়ের যত্ন নিন, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
খালি পায়ে হাঁটা এড়িয়ে চলুন, ঘরেও নরম জুতা ব্যবহার করুন।
পায়ে ছোটখাটো আঘাত বা কাটা-ছেঁড়াকেও অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
আপনার পায়ের ছোট ইঙ্গিতটিও হতে পারে ডায়াবেটিসের বড় সতর্কবার্তা। সময় থাকতে সচেতন হন, সুস্থ থাকুন।
সূত্র : আজকাল
আরটিভি/এসকে