ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় হিমাচল প্রদেশের পরিবেশগত সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ভারী বর্ষণ, ভূমিধস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যটির টেকসই ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, এখনই পদক্ষেপ না নিলে মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যেতে পারে হিমাচল।
শনিবার (২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ জুলাই বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মাধবনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ হিমাচলের পরিবেশ নিয়ে এক মামলার শুনানিতে বলেন, হিমাচলের অবস্থা দিনকে দিন খারাপ থেকে ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে পরিবেশ ধ্বংসের মানবসৃষ্ট প্রক্রিয়া। যদি এখনই সতর্ক না হওয়া যায়, তাহলে হিমাচলকে মানচিত্রে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এদিন শুনানি হচ্ছিল হিমাচল হাইকোর্টের দেওয়া এক পুরোনো আদেশ ঘিরে, যেখানে রাজ্যের কিছু অঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত সবুজ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে গাছ ও পাহাড় কাটা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে করা পিটিশনের শুনানিতে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তারা হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ করবে না বরং রাজ্যের কোন কোন এলাকায় কী ধরনের নির্মাণ বা খনন কাজ করা যাবে— সে বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরির পক্ষে তারা।
বিচারপতিরা স্পষ্ট করে বলেন, এই বিপর্যয়ের জন্য প্রকৃতি একা দায়ী নয়। মানুষ ও তার অদূরদর্শী কর্মকাণ্ডের দায় প্রকৃতির চেয়েও বেশি। প্রতি বছর ভূমিধস হচ্ছে, বাড়িঘর ও রাস্তা ধ্বংস হচ্ছে, অথচ আমরা এই ধ্বংসের পেছনের মানবসৃষ্ট কারণগুলো এড়িয়ে যাচ্ছি।
সতর্কবার্তা দিয়ে আদালত আরও বলে, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করে রাজস্ব আয় করা কখনও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। যদি এমন নীতি চলতে থাকে, তাহলে হিমাচল একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা চাই না, এমন দিন দেখতে হোক।
আরটিভি/এসএইচএম