এক বছরের এক শিশু কোবরা সাপকে কামড়ে হত্যা করেছে। বিরল এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে পশ্চিম চম্পারন জেলার একটি গ্রামে। সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু বর্ষায় প্রায়ই ঘটে, তবে উল্টোটি—একটি শিশুর কামড়ে সাপ মারা যাওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঘটনাটি ঘটে মোহচি বনকাটোয়া গ্রামে। পরিবারের সদস্য মতিসারি দেবী জানান, সেদিন বাড়ির পেছনে চুলার কাঠ গুছিয়ে রাখছিলেন তিনি। তখন পাশেই খেলছিল তার এক বছরের নাতি গোবিন্দ। এ সময় ঝোপ থেকে একটি সাপ বেরিয়ে এলে শিশুটি সেটিকে ধরে দাঁত দিয়ে কামড় দেয়।
মতিসারি দেবী বলেন, সাপটাকে কামড় দেওয়ার পর ও কিছুক্ষণ অজ্ঞান ছিল। পরে আমরা বুঝতে পারি ওটা ‘গেহুঁওন’—আমাদের এলাকায় কোবরা সাপকে এ নামেই ডাকা হয়।
গোবিন্দকে প্রথমে নেওয়া হয় মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, পরে স্থানান্তর করা হয় বেতিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই তার চিকিৎসা করেন শিশু রোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. কুমার সৌরভ।
তিনি বলেন, শিশুটির মুখের পাশটা কিছুটা ফুলে গিয়েছিল। পরিবার জানায়, সে সাপটির মুখে কামড় দিয়েছিল এবং সম্ভবত দেহের কিছু অংশ খেয়েও ফেলেছিল।
ডা. সৌরভ জানান, সাপ কামড়ালে বিষ রক্তে মিশে স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। কিন্তু কেউ যদি সাপকে কামড়ায়, তবে বিষ সরাসরি হজমতন্ত্রে প্রবেশ করে এবং মানবদেহ সাধারণত সেই বিষকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়।
তবে তিনি সতর্ক করেন, যদি কোনো ব্যক্তির খাদ্যনালিতে আলসার বা রক্তক্ষরণজনিত ক্ষত থাকে, তাহলে বিষ রক্তপ্রবাহে ঢুকে যেতে পারে এবং রোগীর অবস্থা জটিল হতে পারে।
অন্যদিকে, একই হাসপাতালে ওই সময় ভর্তি হয়েছিল আরেক শিশু—যাকে কোবরা সাপ কামড়েছিল। চিকিৎসকের ভাষায়, এক শিশু সাপকে কামড়েছে, আরেকটিকে সাপ কামড়েছে—তবে দুজনই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
স্থানীয় সাংবাদিক নেয়াজ জানান, গোবিন্দ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে এবং এলাকাজুড়ে সে এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। শ্রাবণ মাসে সাপ বের হওয়া স্বাভাবিক, তবে শিশুর হাতে সাপ মারা যাওয়ার ঘটনা এই এলাকায় এই প্রথম। গোবিন্দের বাবা সুনীল সাহ পেশায় একজন আইসক্রিম বিক্রেতা। ছেলের সুস্থতা নিয়ে এখন কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন পরিবার। তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
আরটিভি/এআর