মৃত্যুপথযাত্রীদের জন্য পণ্য ডিজাইন করেন বিটেন

ডয়চে ভেলে

মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫ , ০৮:০০ পিএম


মৃত্যুপথযাত্রীদের জন্য পণ্য ডিজাইন করেন বিটেন
ফাইল ছবি।

ডিজাইনার বিটেন স্টেটার মৃত্যুপথযাত্রী রোগী ও তাদের প্রিয়জনদের সৌন্দর্যের ছোঁয়া দেন। হাসপাতাল এবং হসপিসের জন্য তিনি ফ্যাশন এবং ডিজাইনার পণ্য তৈরি করেন।

বিজ্ঞাপন

বিটেন স্টেটার বলেন, মৃত্যু এবং তার আগের দিনগুলো নিয়ে আলোচনা এখনো যেন অনেকটা ট্যাবু বিষয়। কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়। আমি চাই আমার ডিজাইন মানুষকে জীবনের ঐ সময়টা সম্পর্কে সংবেদনশীল করে তুলুক, যা আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে। সেটা অন্যদের যত্ন নেওয়ার সময় হোক কিংবা যখন আমরা নিজেরাই শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাই তখন।

এসব পণ্যের মধ্যে আছে সিরামিকের কাপ, রঙিন গাউন, ফোন হোল্ডার, বেড-বক্স ইত্যাদি। বিটেন স্টেটার তার লেবেলের নাম দিয়েছেন ফাইনালি। বিটেন স্টেটার হামবুর্গের বাসিন্দা হলেও প্রায় ২০ বছর ধরে জুরিখে বাস করছেন। সেখানে তিনি একটি আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইনের অধ্যাপক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি আমার মায়ের সঙ্গে তার শেষ চার বছর ছিলাম। তার সঙ্গে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে থেকেছি- অনকোলজি ওয়ার্ড থেকে সার্জারি, প্যালিয়েটিভ কেয়ার ওয়ার্ড থেকে হসপিস পর্যন্ত। সেই সময় আমি কার্যকারিতা, অর্থ এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে নিজেকে অনেক প্রশ্ন করেছি। কারণ, আমিতো শুধু পরিবারের একজন সদস্য ছিলাম না, ডিজাইনারও ছিলাম।

জুরিখের ভাইড-স্পিটাল হাসপাতালের সহযোগিতায় তিনি তার ডিজাইনার পণ্যগুলো তৈরি করেছেন। এগুলো শুধু কাজের হলেই চলবে না, দেখতেও সুন্দর হওয়া জরুরি। রোগীর যত্ন নেওয়া বিষয়ের বিশেষজ্ঞ নোয়েমি লেহমান প্যালিয়েটিভ কেয়ার ওয়ার্ডে কাজ করেন। রোগীদের শেষ দিনগুলোতে তাদের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেন। 

লেহমান বলেন, মানুষ যখন অসুস্থ থাকে বা তাদের জীবন শেষের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তখন সুন্দর জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ- এবং এটা শুধু তাদের জন্যই নয়, তাদের প্রিয়জন এবং দর্শনার্থীদের জন্য, এবং আমাদের জন্য, যারা এমন রোগীদের যত্ন নিই। এসব জিনিস রোগীদের তাদের বর্তমান অবস্থা থেকে মনোযোগ একটু হলেও অন্যদিকে নিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

বিটেন স্টেটার ২০২৪ সালে জুরিখে তার প্রথম দোকান খোলেন। তার ক্লায়েন্টদের একজন হলেন স্থপতি রোলান্ড লেহনেন। ২০১৭ সালে তার স্বামী ক্যানসারে আক্রান্ত হন।

বিজ্ঞাপন

লেহনেন বলেন, আপনি সবচেয়ে সুন্দর কফিন আর চুল্লি বেছে নিতে পারেন। কিন্তু মৃত্যুর আগের সময়গুলো নিয়ে কথা বলা আমাদের সমাজে এতটাই নিষিদ্ধ যে এটি একটি বড় সমস্যা তৈরি করে। দুর্ভাগ্যবশত মৃত্যুর প্রক্রিয়ার সময় প্রায়ই সৌন্দর্যের বিষয়টি হারিয়ে যায়।

বিটেন স্টেটারকে ২০২৩ সালে ডিজাইন প্রাইজ সুইজারল্যান্ড দেয়া হয়েছিল, যা তার জন্য আরেকটি উৎসাহের বিষয় ছিল।

বিটেন স্টেটার জানান, আমি এই বিষয়টা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাব। এটা আমার হৃদয়ের খুব কাছের কিছু। আমি মনে করি এই ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা, এবং তাদের সঙ্গে একসাথে এগিয়ে যাওয়া দুর্দান্ত একটা বিষয়। নিজে খুব দুর্বল না হওয়া পর্যন্ত আমি এটা চালিয়ে যেতে চাই।

আরটিভি/এএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission