জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক পর্যবেক্ষক আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এ ঘোষণা দেন। এর ফলে, আইএইএ’র শর্ত মেনে চলার আর কোনও বাধ্যবাধকতা থাকলো না ইরানের জন্য। অর্থাৎ, এখন থেকে নিজেদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যেতে পারবে দেশটি।
বুধবার (২ জুলাই) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থাটির সঙ্গে তার সরকারের সম্পর্ক স্থগিত করার জন্য আইন অনুমোদন করেছেন বুধবার। এর আগে, গত সপ্তাহে আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার জন্য আইন পাস হয় ইরানের পার্লামেন্টে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত ও উত্তেজনার পর ইরানের পারমাণবিক নিরাপত্তা নিয়ে সংস্থাটির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা না থাকায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে তেহরান। এ ছাড়া দেশটির অভিযোগ ছিল, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর কোনো নিন্দা বা প্রতিবাদ জানায়নি আইএইএ।
এদিকে আইএইএ থেকে ইরানের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, ইরানের এই স্থগিতাদেশ অগ্রহণযোগ্য, কারণ তাদের সামনে পথ পরিবর্তন করে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল।
তিনি আরও বলেন, ইরান কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে বা রাখতে পারে না।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, আইএইএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ইরানের এই ঘোষণায় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। ভবিষ্যতের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ইরানের অস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করা প্রয়োজন।
তারা বলছেন, আইএইএ-র পর্যবেক্ষণ ছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচির স্বচ্ছতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে আসছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, ইরান বেসামরিক কর্মসূচির আড়ালে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগোতে পারে। যদিও তেহরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য।
আরটিভি/এসএইচএম/এস