বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ বজ্রপাতের রেকর্ড করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ওয়ার্ল্ড মেট্রোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।
৮২৯ কিলোমিটার বিস্তৃত এ ‘মেগাফ্ল্যাশটি’ ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের পূর্বাংশ থেকে শুরু হয়ে কানসাস সিটির কাছে গিয়ে শেষ হয়েছিল বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের এ আবহাওয়া সংস্থাটি বলেছে, এই ‘মেগাফ্ল্যাশ’ বজ্রপাতটিই প্রমাণ করে একটি বজ্রপাত কতটা ভয়াবহ শক্তিশালী হতে পারে এবং একটি ঝড়ের স্থান থেকে অনেক দূরেও কিভাবে তা বিপদের কারণ হতে পারে।
সবচেয়ে দীর্ঘ বজ্রপাতের আগের রেকর্ডও ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল মিসিসিপি ও টেক্সাসের মধ্যে ৭৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বজ্রপাত রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ২০২২ সালে স্বীকৃতি পায়।
২০১৭ সালের বজ্রঝড়ে একাধিক বিশাল বজ্রপাত ঘটেছিল। সেগুলোর মধ্যে তিনটি বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই ‘মেগাফ্ল্যাশ’ বজ্রপাতের সংজ্ঞা তৈরি করা হয়।
পরবর্তীতে ওই বছরের ঝড় সম্পর্কিত তথ্য নতুনভাবে বিশ্লেষণ করে এর থেকেও বড় একটি বজ্রপাত খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২০ সালের বজ্রপাতটি থেকেও বড় ছিল।
ডব্লিউএমওর আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত চরম রেকর্ড পর্যবেক্ষক র্যান্ডাল সার্ভেনি বলেছেন, বজ্রপাত মূল ঝড়ের কেন্দ্র থেকে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণেই কিছু বজ্রপাতকে ‘বোল্ট ফ্রম দ্য ব্লু’ বলা হয়, যা পরিষ্কার আকাশ থেকেও হঠাৎ দেখা যায়।
তিনি আরো বলেন, এ রেকর্ডগুলো কেবল বৈজ্ঞানিক কৌতূহল নয়—এগুলো প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, জার্মানি, স্পেন, নেপাল ও ইসরায়েলের ১১ জন বিজ্ঞানীর একটি কমিটি নতুন এ বজ্রপাত রেকর্ডের স্বীকৃতি দেয়। স্যাটেলাইটভিত্তিক বজ্রপাত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এটি এখনো বজ্রপাতের ধরন, অবস্থান বা ঘনত্বের প্রবণতা বিশ্লেষণের জন্য যথেষ্ট সময় পায়নি।
ডব্লিউএমও বলেছে, এ নতুন আবিষ্কারগুলো বজ্রপাতের ঝুঁকি ও ভয়াবহতা আরো একবার সামনে নিয়ে এসেছে।
ডব্লিউএমও প্রধান সেলেস্তে সাউলো বলেন, বজ্রপাত যেমন বিস্ময়ের উৎস, তেমনি এটি একটি প্রধান বিপদও। এটি প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের প্রাণ নেয়।
আরটিভি/একে