যেভাবে হত্যা করা হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তাকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫ , ০৫:২৯ পিএম


যেভাবে হত্যা করা হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তাকে
ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক সিটির একটি অফিস ভবনে গোলাগুলির ঘটনায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহত হয়েছেন। চারজনের মধ্যে শুধু দিদারুলের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

বন্দুকধারী ব্যক্তি চারজনকে হত্যার পর নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ। এ ঘটনায় নিউইয়র্কজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ ঘটনাকে ‘ঘৃণ্য’ এবং ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ৪৪ তলা ভবনটিতে বন্দুকধারী হামলা চালানোর পর সেটিতে লকডাউন আরোপ করা হয়। 

বিজ্ঞাপন

যেভাবে হত্যা করা হয় দিদারুলকে

ঘটনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে। ওই সময় একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি নিউইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক পার্ক অ্যাভিনিউতে থামে। বন্দুকধারী এক ব্যক্তি ওই গাড়ি থেকে একটি এম-৪ রাইফেল নিয়ে নামেন। এরপর তিনি ‘৩৪৫ পার্ক অ্যাভ’ নামে ৪৪ তলা ভবনটিতে প্রবেশ করেন। ভবনটির লবিতে ঢুকেই ডান দিকে ঘুরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেন।

এরপর বন্দুকধারী এক নারীকে গুলি করেন। তিনি একটি পিলারের পেছনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নারীকে গুলি করে লবি দিয়ে ‘গুলি করতে করতে’ হেঁটে যেতে থাকেন হামলাকারী। এরপর সিকিউরিটি ডেস্কে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন হামলাকারী। তখন তিনি লিফটের বোতামে চাপ দেন। একই সময় লবিতে আরেক ব্যক্তিকে গুলি করেন বন্দুকধারী।

বিজ্ঞাপন

হামলাকারী লিফট থেকে এক নারীকে নেমে যেতে দেন। তবে তিনি তার কোনো ক্ষতি করেননি। এরপর লিফটে করে ৩৩ তলায় যান হত্যাকারী। সেখানে গিয়ে আরেক নারীকে গুলি করে তারপর নিজের বুকে গুলি চালান তিনি।

বিজ্ঞাপন

শোকস্তব্ধ নিউইয়র্ক, বেদনায় বাংলাদেশ

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এই হামলাকে ‘ঘৃণ্য ও জঘন্য’ উল্লেখ করে বলেন, ‘দিদারুল ছিলেন এই শহরের প্রকৃত প্রতিনিধি। তিনি ছিলেন একজন সৎ, নিবেদিতপ্রাণ এবং সাহসী পুলিশ অফিসার।’

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দিদারুল তার দায়িত্ব পালনের সময় নিজেকে ঝুঁকির মুখে ফেলেন এবং নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। ঠান্ডা মাথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হিরো ছিলেন এবং হিরো হিসেবেই বিদায় নিয়েছেন।

দিদারুল ইসলাম নিউইয়র্ক পুলিশের একজন দায়িত্বশীল ও প্রশংসিত সদস্য ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। কর্মরত ছিলেন ব্রঙ্কসের ৪৭ নম্বর প্রিসিঙ্কটে। তার দুই সন্তান রয়েছে এবং তার স্ত্রী বর্তমানে আট মাসের গর্ভবতী। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তারা তৃতীয় সন্তানের মুখ দেখার অপেক্ষায় ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পর পুরো ভবন লকডাউন করা হয় এবং চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই ভয়াবহ ঘটনা কেবল নিউইয়র্ক নয়, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি ও মানবতাপ্রেমী মানুষদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে।

এদিকে ওই বন্দুকধারীর পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার নাম শেন তামুরা। ২৭ বছর বয়সী এই হত্যাকারী লাস ভেগাসের বাসিন্দা। নেভাডা রাজ্যে তার অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এ ছাড়া তার মানসিক সমস্যার রেকর্ডও রয়েছে। তবে মানসিক সমস্যার কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কিনা সেটি নিশ্চিত নয়।

আরটিভি/একে/আইএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission