সময়টা ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর, হঠাৎই এক খবরে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে নেমে এলো শোকের ছায়া। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মারা যান সে সময়ের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের জসীম উদ্দিন (নায়ক জসীম)। মাত্র ৪৮ বছর বয়সী এই অভিনেতার মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ভক্তরা। শোনা যায়, সে সময় এফডিসিতে জসীমকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ভিড় জমান লাখো মানুষ।
নায়ক জসীমের তিন ছেলে- এ কে সামী, এ কে রাতুল ও এ কে রাহুল। বাবার মতো অভিনয়জগৎ নয়, তারা তিনজনই বেছে নিয়েছেন সুরের পথ। শৈশবে বাবাকে হারানো তিন ভাই একে অন্যের হাত ধরে বড় হয়েছেন। কিন্তু রোববার (২৭ জুলাই) হাঠৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালেই চলে যান রাতুল।
প্রিয়জনকে হারানোর এই শূন্যতায় এবার নিজের আবেগ ছুঁড়ে দিলেন ভাই রাহুল। এক ফেসবুক পোস্টে ভেঙে পড়া এক ভাইয়ের মনখারাপ, এক নিঃশেষ আত্মীয়তার ভাষা যেন ধরা দিলো, যেখানে শব্দের চেয়ে অনুভূতিই বেশি বলে উঠল।
পোস্টে রাহুল লিখেছেন, স্ক্রল করি আর আপনাদের ভালোবাসা দেখি, খালি আমার ভাইটার জন্য। ভেঙে পড়ছি অনেক। আমার ভাইকে নিয়ে অনেক কিছু প্রতিদিন বলব, কেউ কিছু মনে নিয়েন না। ধন্যবাদ আপনাদের। বাঁচিয়ে রাখি আমরা সবাই।
এরপর পোস্টের পরতে পরতে উঠে এসেছে তার ও রাতুলের সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, আর সেই হারিয়ে যাওয়া নির্ভরতার গল্প।
রাহুল লিখেছেন, পৃথিবীতে একটা এ কে রাতুল ছিলো, আর আসবেও না এরকম মানুষ কোনোদিন। ভাই রে, আমি প্রতিজ্ঞা করছি- আমি যা করি সেটা করে যাব। তুমি আমার গিটার টোন প্রতি শোয়ের পর গুঁতাইতে চাইতা, এখন কেউ নাই গুঁতানোর। কিন্তু তাও করে যাব তোমার জন্য। উপর থেকে দেখে হাসিটা দিও।
পোস্টে আরও উঠে আসে দুই ভাইয়ের ছোট ছোট স্মৃতির ঝলক। রেসলিং নিয়ে মজা, ভিডিও গেমস নিয়ে উত্তেজনা, আর একসঙ্গে গল্প করার মুহূর্তগুলো।
রাহুল লিখেছেন, রেসলিং নিয়ে কী হচ্ছে আপডেট দিবোনে, কেমনে দিবো জানি না। তোমার জন সিনা বেশি দিন তো রেসলিং করবে না, দেখি কী হয়। বলছিলা জিটিএ-৬ আসলেই প্রি-অর্ডার করতে চাও, মন খারাপ হইছিলো যখন পিছিয়ে গেছে। তোমার কনসোলেই ওইটা শেষ করব আমি।
সবশেষে রাহুল বলেন, আব্বুর সঙ্গে সব স্টোরি শেয়ার কইরো, তিন ভাই মিলে কী আকামগুলা করছি। হালকা ফিল্টার কইরো।
সামী-রাতুল মিলে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘ওন্ড’। যে ব্যান্ডের ড্রামার বড় ভাই সামী, এবং দলটির মূল ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ছিলেন রাতুল। এছাড়াও রাতুল ছিলেন সময়ের দক্ষ এক শব্দ প্রকৌশলী। অন্যদিকে রাহুল কাজ করছেন একজন ফ্রিল্যান্স মিউজিশিয়ান হিসেবে।
আরটিভি/এএ/আইএম