শ্রেণিকক্ষের শেষ সারিটা যেন এক রহস্যময় রাজ্য। শিক্ষকদের চোখের আড়ালে থাকা এক স্বাধীন ভূখণ্ড। শেষ বেঞ্চগুলোতে বসা ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হয় ‘ব্যাক বেঞ্চার’। তবে ব্যাক বেঞ্চার মানেই পিছিয়ে পড়া নয়। সময় হয়েছে অন্যভাবে ভাবার, দেখার আর গড়ার। ব্যাক বেঞ্চারের ধারণা পাল্টে দিয়েছে মালয়ালাম ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ সিনেমা।
চারদিকে যখন সিনেমার নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে নানা বিতর্ক চলমান। তখনই ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ সিনেমা সমাজ ও শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাবের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ক্লাসরুমে বসার ধরনে এক অভিনব পরিবর্তনের প্রেরণা জুগিয়েছে সিনেমাটি। ভারতের কেরালা রাজ্যের ছয়টি স্কুল এবং পাঞ্জাবের একটি স্কুলে গোল করে বসার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
সিনেমা দেখে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার খবরে আনন্দিত ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’-এর পরিচালক বিনেশ বিশ্বনাথন। তার কথায়, চলচ্চিত্র সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এটা প্রমাণিত। ‘ওস্তাদ হোটেল’ ও ‘ট্রাফিক’-এর মতো মালয়ালাম সিনেমাও তা দেখিয়েছে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমি খুবই খুশি। কারণ, আমার ভাবনা বাস্তব জীবনে পৌঁছেছে।
‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’ সিনেমার শেষ দৃশ্যে শ্রেণিকক্ষে বৃত্তাকার বসার একটি দৃশ্য দেখানো হয়। এ সিনেমার মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে সামনে ও পেছনে বসার বিভেদ সরিয়ে সাম্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন নির্মাতা। পরিচালকের এমন ধারণা শিক্ষকদের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে।
ত্রিপুরার এক স্কুলশিক্ষক ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, চলচ্চিত্রটি আমার স্কুলজীবনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। শেষ দৃশ্যের বৃত্তাকার বসার পদ্ধতিটি দারুণ লেগেছে। আমার ক্লাসে মাত্র ২০ জন শিক্ষার্থী, তাই এ পদ্ধতি অনুসরণ করতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে অধিক শিক্ষার্থী আছে এমন ক্লাসের জন্য এটি চালু করা কঠিন হতে পারে।
কীভাবে এমন গল্প নির্মাণার কথা মাথায় এসেছিল? তা জানিয়ে পরিচালক বিনেশ বিশ্বনাথনের বলেন, ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তামিল চলচ্চিত্র ‘কাকা মুট্টাই’ তাকে শিশুদের জন্য একটি অর্থবহ সিনেমা বানাতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বলে রাখা ভালো, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন, অজু ভারঘেসে, সাইজু কুরুপ, আনন্দ মনমাধান, জন অ্যান্টনি, শ্রুতি শুরেশি, গঙ্গা মিরাসহ আরও অনেকে।
আরটিভি/এএ/এস