আদালত চত্বরে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

আরটিভি নিউজ  

শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫ , ০৪:৪৩ এএম


আদালত চত্বরে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে ইজিবাইক চালক শওকত মোল্লা (২০) হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজেশ রবি দাস (২৯) তার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তার শরীরে এ সময় ডাণ্ডাবেড়ি লাগানো ছিল।  

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে আদালত ভবন থেকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে নিচে নামানো হয় ফাঁসির আসামিদের। আদালত ভবনের সিঁড়ি থেকে পুলিশ ভ্যানের দূরত্ব ছিল আনুমানিক ৩০ গজ। এ সময় পথের মাঝামাঝি এসে ফাঁসির আসামি  রবিদাস পল্লির রাজেশ রবি দাস (২৯) তার স্ত্রীর দিকে তাকান। পরে তার স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকে বুকে টেনে নেন স্বামী। এরপর পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর ক্ষেপে যান রবি দাস। পরে সব আসামিকে পুলিশ ভ্যানে করে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

এর আগে, দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান ইজিবাইক চালক শওকত মোল্লা (২০) হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সকল আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এই জরিমানার অর্থ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পরিশোধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তাদের মধ্যে রাজেশ রবি দাস ফরিদপুর শহরের রবিদাস পল্লির বাসিন্দা। অন্যরা হলেন- ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার মো. মেহেদী আবু কাওসার (২৫), মো. জনি মোল্লা (৩০) ও মো. আবু রাসেল শেখ (২৫) (পলাতক), গোয়ালচামট মহল্লার মো. রবিন মোল্লা (২৫)। 

এছাড়া, ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে রাজবাড়ীর সদরের মসলিসপুর গ্রামের মো. বাদশা শেখকে (৩১)।  পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ১০ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।

রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন বাদে বাকি সকল আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।  

বিজ্ঞাপন

আদালত সুত্রে জানা যায়, নিহত শওকত মোল্লা (২০) শহরের পশ্চিম খাবসপুর এলাকার মো. আয়নাল মোল্লার  ছেলে। তিনি ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর শওকত মোল্লা  ইজিবাই নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে  নিখোঁজ হন। পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে শহরের মোল্লা বাড়ি সড়কের শেষ মাথায় ফরিদপুর শহর বাইপাসের কাছে আবুল হোসেনের ধানক্ষেতে তার লাশ গলায় বেল্ট পেচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে ২০১৯ সালের  ১৬ নভেম্বর নিহত শওকতের বাবা মো. আয়নাল মোল্লা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা  মামলা দায়ের করেন। 

বিজ্ঞাপন

মামলায় উল্লেখ করা হয় তার ইজিবাই চালক ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা দামের ইজিবাইক ও মুঠোফোনটি দিয়ে যায় হত্যাকারীরা। এ মামলাটি তদন্ত করেন ফরিদপুর কোতয়ালি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আক্তার। তিনি ২০২০ সালের ২০ আগস্ট উল্লেখিত ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের সরকারি পক্ষের অতিরিক্ত কোঁসুলি চৌধুরী জাহিদ হাসান বলেন, এ রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ রায়ের ফলে সমাজে এ জাতীয় অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে এবং অপরাধ করে যে পার পাওয়া যায় না তা প্রমাণ হলো। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। 

রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব। সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী। 

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission