টিকটকে পরিচয় ও ইউটার্চে চার মাসের প্রেম তাদের। অতঃপর চীন থেকে বাংলাদেশের মাদারীপুরে এসে তরুণীকে বিয়ে করেছেন সিতিয়ান জিং (২৬) নামের এক যুবক। বিয়ের পর সিতিয়ান জিং শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন।
রোববার (২৭ জুলাই) মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষের চরের কনের বাড়িতে পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়।
সিতিয়ান জিং চীনের সাং হাই শহরের সি জিং নিংয়ের ছেলে। তারা দুই ভাই। সাং হাই শহরে তার রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। কনের নাম সুমাইয়া আক্তার। তিনি উত্তর মহিষেরচর এলাকার সাইদুর মুন্সির মেয়ে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সিতিয়ান জিংয়ের সঙ্গে টিকটকে পরিচয় হয় সুমাইয়ার। পরে ইউটার্চের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান-প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক হয়।
চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন সিতিয়ান জিং। একদিন ঢাকায় থেকে ২৬ জুলাই মাদারীপুর মহিষের চরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন তিনি। সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা ও তার দুই আত্মীয় ঢাকা থেকে তাকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন সিতিয়ান জিং। পরে ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে আশপাশের মানুষ ভিড় করতে থাকেন।
এ বিষয়ে সুমাইয়া আক্তার বলেন, চার মাসের প্রেমের সূত্রে চীন থেকে বাংলাদেশ চলে আসবেন এটা কখনও ভাবিনি। প্লেনে ওঠার সময় তিনি বলেছেন আমি বাংলাদেশে আসতেছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করেনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি। ও তার মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। ওরাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই সিতিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন। এরমধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। ও এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এরমধ্যে আমার সব কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে।
সিতিয়ান জিং বলেন, বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাব। আমার পরিবার সব জানে।
প্রতিবেশী একজন বলেন, চীন দেশের এক নাগরিক এখানে এসে আমার প্রতিবেশী বোন সুমাইয়াকে বিয়ে করেছেন। আমরা এতে খুব খুশি। তাছাড়া তাকে দেখার জন্য আশপাশের মানুষজন ভিড় করছে।
পাঁচখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, কয়েকদিন আগে চীন থেকে এক ছেলে এখানে এসেছেন। তার সঙ্গে আমাদের এলাকার সুমাইয়ার বিয়ে হয়। প্রথমে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। শুনেছি চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছুদিনের মধ্যে সুমাইয়াকেও নিয়ে যাবে।
আরটিভি/এএ/আইএম