টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আল-কারীম দারুর উলুম আজাদী মাদরাসার ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহর বিরুদ্ধে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভূঞাপুর পৌরসভার সন্নিকটে ২০২১ সালে আল-কারীম দারুল উলুম আজাদী মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ্ এই প্রতিষ্ঠানের নাজেরা বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে মাদরাসায় ঘুমানোর সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ্ তাকে কাজের কথা বলে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে তাকে পা ও শরীর মালিশ করতে বাধ্য করা হয়। এরপর শিক্ষক তাকে তার যৌনাঙ্গ মালিশ করতে বললে সে তা করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষক ছাত্রটির সাথে যৌন নিপীড়নমূলক আচরণ করেন।
ভুক্তভোগী আরও জানায়, এর দুই দিন পর, বৃহস্পতিবার রাতে, শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ্ আবারও তাকে জোর করে ডেকে নিয়ে যান এবং একই ধরনের কাজ করানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে সে চিৎকার করলে শিক্ষক তাকে ছেড়ে দেন।
এই ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবি জানান। তবে অভিযোগ উঠেছে যে, স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারকে ধর্মের দোহাই দিয়ে মামলা না করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়। ভুক্তভোগী ছাত্রের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। সেই ধর্মীয় শিক্ষকই যদি এমন ঘৃণ্য কাজ করে, তাহলে তারা কীভাবে ধর্মের কথা বলে? আজ আমার ছেলের সাথে যা হয়েছে, কাল অন্য কারো ছেলের সাথেও তা হতে পারে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ্ জনরোষের ভয়ে পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদরাসাটি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভূঞাপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মনোয়ার হোসেন পরিচালনা করেন। এ বিষয়ে জানার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম রেজাউল করিম জানান, এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরটিভি/এএএ