খুলনার পাইকগাছার আলোচিত মিনহাজ নদীর মুখে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পাইকগাছা উপজেলার লস্কর, গড়ইখালী, চাঁদখালী এবং কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা গেছে, ২৫১.২৫ একর আয়তনের মিনহাজ নদী (বদ্ধ জলাশয়) উল্লিখিত চার ইউনিয়নের কয়েকটি বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। আষাঢ় মাসের অতিবৃষ্টিতে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদীর মুখ পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলের পানি ভাটির শিবসা নদীতে সঠিকভাবে নামতে পারছে না। এতে ফসলি জমির পাশাপাশি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গেছে, যার ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার বেশি বলে দাবি স্থানীয়দের। জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না কৃষকরা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে লস্কর ইউনিয়নের খড়িয়া গোড়া বাজারে মিনহাজ নদীর পাড়ে এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন জিএম সামছুর রহমান।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মোজাফফর হোসেন, আসমত শিকারী, মাওলানা আবুল কালাম, সজল সানা প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে খুলনার জেলা প্রশাসক ১৪৩১ থেকে ১৪৩৬ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত স্থানীয় সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতিকে উক্ত জলাশয়ের ইজারা দিয়েছেন। বছরে ইজারামূল্য ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং ভ্যাট ৯ লাখ টাকা। ইজারা নেওয়ার পর থেকেই সমিতি জলাশয়ে মাছ চাষ করে আসছে, ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সরকারের নীতিমালা মেনে এবং ইজারার টাকা পরিশোধ করেই জলাশয় ব্যবহার করছি।
তিনি আরও বলেন, এ এলাকার ৮টি স্লুইসগেটের মধ্যে ৭টি বন্ধ থাকায় পানি বের হতে পারছে না। মাত্র একটি গেট দিয়ে এত পানি নামা সম্ভব নয়। আবার মিনহাজ নদীর মুখ ভরাট হয়ে যাওয়াও জলাবদ্ধতার বড় কারণ। সরকার যদি ইজারা বাতিল করে, আমরা মানতে বাধ্য।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে মিনহাজ নদীর মুখ খনন ও স্লুইসগেটগুলো সচল করতে হবে। পাশাপাশি নদীর ইজারা বাতিল করে জনস্বার্থে উন্মুক্ত ঘোষণা করতে হবে
আরটিভি/এএএ