ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত গুলশান লেক এখন এক ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সুউচ্চ ভবনের ছায়ায় ঢাকা এই জলাশয় পচা পানি ও দুর্গন্ধে ভরা, যা এলাকাবাসী এবং অফিসগামীদের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
লোকালয়ে অভিযোগ, বারবার সিটি করপোরেশনে বিষয়টি তুলে ধরার পরও কোনো কার্যকর প্রতিকার মিলছে না। শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে খাল পরিষ্কার কার্যক্রমের জন্য মোট ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও গুলশান লেকের জন্য বিশেষ কোনো বাজেট রাখা হয়নি।
গুলশান সোসাইটির সহসভাপতি ইসরাত জাহান জানান, বিভিন্ন ভবনের সুয়ারেজ সরাসরি লেকে চলে যাচ্ছে, যা পানিকে দূষিত করছে। তিনি উল্লেখ করেন, রাজউক, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার সমন্বয়ে কাজ করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে এবং লেক দূষণমুক্ত রাখতে নজরদারি বাড়াতে হবে। তার কথায়, এ ক্ষেত্রে রাজউকেরও ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, সকাল ৮টার মধ্যে সারা এলাকা পরিষ্কার করা হলেও দুপুরের মধ্যেই আবার ময়লা জমে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি।’
এদিকে, গুলশান লেক এখন মশার প্রকোপ বৃদ্ধি ও মাছের অবমুক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগরিকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে শিগগিরই লেকটির অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে।
ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই লেক—যেখানে দূষণ আর অবহেলা মিলিয়ে শহরের বাসযোগ্যতার প্রশ্নকে ঘিরে উঠছে শঙ্কা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই শহর কি সত্যিই বাসযোগ্য থাকবে, নাকি ঢাকাবাসীকে অভ্যস্ত হতে হবে জীবনের এই বিষাক্ত বাস্তবতায়?
আরটিভি/এআর/এস