সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫ , ০৯:০৭ এএম
২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের আর মাত্র এক বছর বাকি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ফুটবল আসর আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। তবে আয়োজনের মূল দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বিশ্বকাপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহরে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজক শহরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬২৫ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সংক্রান্ত সাম্প্রতিক এক বৈঠকে উঠে এসেছে, এখনো কোনো শহরই পায়নি প্রয়োজনীয় সেই অর্থ, এমনকি নেই কোনো সুস্পষ্ট নিরাপত্তা পরিকল্পনাও।
কানসাস রাজ্যের পুলিশ প্রধান গ্রেভস জানান, ‘‘আমাদের শহরে ৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। প্রস্তুতির সময় দিন দিন কমে আসছে। ২০২৪ সালের রাগবি টুর্নামেন্টে আমাদের শহরে সন্ত্রাসী হামলায় একজন নিহত এবং ২৪ জন আহত হন। এমন ঘটনা যদি বিশ্বকাপে ঘটে, তাহলে দায় কে নেবে?’’
বোস্টনের সাবেক পুলিশ কমিশনার এডওয়ার্ড ডেভিসও জানান, ২০১৩ সালের ম্যারাথনে ঘটে যাওয়া বোমা হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। ‘‘বিশ্বকাপের মতো বড় আয়োজন মানেই নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া। এই মুহূর্তে প্রস্তুতির অভাব আমাদের উদ্বিগ্ন করছে,’’ বলেন তিনি।
নিরাপত্তা হুমকি শুধু স্থলপথেই সীমাবদ্ধ নয়, আকাশপথেও দেখা দিয়েছে বড় উদ্বেগ। বিশেষ করে ড্রোন অনুপ্রবেশ এখন সবচেয়ে বড় আশঙ্কার নাম। ২০২৩ সালের রাগবি টুর্নামেন্টে ২৮০০ ড্রোন অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল। রাজ্য পুলিশ তা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়।
এই পরিস্থিতিতে ড্রোন প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ‘ডিফেন্স অ্যাক্ট’ চালুর পরিকল্পনা করছে। আইনটি পাস হলে পুলিশ ড্রোন প্রতিরোধী প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাবে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হতে আর এক বছরেরও কম সময় বাকি, এখনো পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মধ্যে বিশাল ফাঁক রয়ে গেছে।
বিশ্বকাপ শুধু একটি ক্রীড়া উৎসব নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা সক্ষমতার আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বজুড়ে লাখো ভক্ত বিশ্বকাপ দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটে আসবেন। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থেকে মুক্তি দিতে হলে এখনই বরাদ্দ ছাড় ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে—এমনটাই বলছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
আরটিভি/এসকে/এআর