images

এশিয়া

বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ করছে চীন, ভারতের কপালে ঘাম!

রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫ , ০৫:১৪ পিএম

তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো (ব্রহ্মপুত্র হিসেবে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে) নদীতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন। শনিবার (১৯ জুলাই) তিব্বতের মালভূমিতে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। খবর সিনহুয়ার।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দক্ষিণ-পূর্বে ন্যিংচি শহরে অবস্থিত ইয়ারলুং সাংপো নদীর নিম্নপ্রবাহে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন লি কিয়াং। এই ইয়ারলুং সাংপো নদীই তিব্বত ছাড়িয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম রাজ্যে প্রবেশ করার পর ব্রহ্মপুত্র নাম ধারণ করে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

২০২০ সালে পাঁচ বছরের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করে চীন। তিব্বতের বিপুল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এটি তাদের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত অনুমোদন পায় প্রকল্পটি।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বছরে আনুমানিক ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে চীন। 

এই মুহূর্তে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ থ্রি গর্জেস ড্যামের তুলনায় তিন গুণ বড় এই মেগা প্রকল্পে মোট পাঁচটি ক্যাসকেড জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকবে এবং প্রায় ১৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে এটি নির্মাণে। 

তবে, এই প্রকল্প ঘিরে এরই মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ভারতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই বাঁধের ফলে নদীর নিম্নপ্রবাহে বসবাসরত কোটি কোটি মানুষের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। হুমকির মুখে পড়বে ভারত-বাংলাদেশের পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা।

ভারতের দাবি, এই বাঁধটিকে ‘পানির মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির কৌশল’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে চীন। তাছাড়া এর মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বন্যা বা খরার সৃষ্টি করতে পারে দেশটি।

চীন অবশ্য দাবি করছে, প্রকল্পটি নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে সুপরিকল্পিত মূল্যায়ন করা হয়েছে ও এটি ভাটির দেশগুলোর পরিবেশ, ভূ-প্রকৃতি কিংবা পানির অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। 

বেইজিং বলেছে, তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর ক্ষতির বিনিময়ে নিজেদের লাভের চেষ্টা করছে না। বরং, প্রকল্পটি দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রশমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য সহায়ক হবে বলেই দাবি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

অবশ্য, চীনের এই প্রকল্পের প্রতিক্রিয়ায় ভারতও ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর অরুণাচল প্রদেশে নিজস্ব জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে করে পানিসম্পদের ওপর নিজের অধিকার জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।

আরটিভি/এসএইচএম